চড়িভাতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ফল ধরেছে বটের ডালে ডালে ; অফুরন্ত আতিথ্যে তার সকালে বৈকালে বনভোজনে পাখিরা সব আসছে ঝাঁকে ঝাঁক— মাঠের ধারে আমার ছিল চড়িভাতির ডাক । যে যার আপন ভাঁড়ার থেকে যা পেল যেইখানে মালমসলা নানারকম জুটিয়ে সবাই আনে । জাত-বেজাতের চালে ডালে মিশোল ক’রে শেষে ডুমুরগাছের তলাটাতে মিলল সবাই এসে । বারে বারে ঘটি ভ’রে জল তুলে কেউ আনে , কেউ চলেছে কাঠের খোঁজে আমবাগানের পানে । হাঁসের ডিমের সন্ধানে কেউ গেল গাঁয়ের মাঝে , তিন কন্যা লেগে গেল রান্নাকরার কাজে । গাঁঠ-পাকানো শিকড়েতে মাথাটা তার থুয়ে কেউ পড়ে যায় গল্পের বই জামের তলায় শুয়ে । সকল-কর্ম-ভোলা দিনটা যেন ছুটির নৌকা বাঁধন-রশি-খোলা চলে যাচ্ছে আপনি ভেসে সে কোন্‌ আঘাটায় যথেচ্ছ ভাঁটায় । মানুষ যখন পাকা ক’রে প্রাচীর তোলে নাই মাঠে বনে শৈলগুহায় যখন তাহার ঠাঁই , সেইদিনকার আল্‌গা-বিধির বাইরে-ঘোরা প্রাণ মাঝে মাঝে রক্তে আজও লাগায় মন্ত্রগান । সেইদিনকার যথেচ্ছ-রস আস্বাদনের খোঁজে মিলেছিলেম অবেলাতে অনিয়মের ভোজে । কারো কোনো স্বত্বদাবীর নেই যেখানে চিহ্ন , যেখানে এই ধরাতলের সহজ দাক্ষিণ্য , হালকা সাদা মেঘের নিচে পুরানো সেই ঘাসে , একটা দিনের পরিচিত আমবাগানের পাশে , মাঠের ধারে , অনভ্যাসের সেবার কাজে খেটে কেমন ক’রে কয়টা প্রহর কোথায় গেল কেটে । (ছোটদের ছড়া-কবিতা ) [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] হিং টিং ছট্ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১২৯৯ সোনার তরী (কাব্যগ্রন্থ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট কবিতা স্বপ্ন দেখেছেন রাত্রে হবুচন্দ্র ভূপ — অর্থ তার ভাবি ভাবি গবুচন্দ্র চুপ। শিয়রে বসিয়ে যেন তিনটে বাদঁরে উকুন বাছিতেছিল পরম আদরে — একটু নড়িতে গেলে গালে মারে চড় , চোখে মুখে লাগে তার নখের আঁচড় । সহসা মিলালো তারা , এল এক বেদে, ‘পাখি উড়ে গেছে ‘ ব‘লে মরে কেঁদে কেঁদে। সম্মুখে রাজারে দেখি তুলি নিল ঘাড়ে , ঝুলায়ে বসায়ে দিল উচু এক দাঁড়ে। নীচেতে দাঁড়ায়ে এক বুড়ি থুড়থুড়ি হাসিয়া পায়ের তলে দেয় সুড়সুড়ি। রাজা বলে ‘কী আপদ ‘ কেহ নাহি ছাড়ে— পা দুটা তুলিতে চাহে , তুলিতে না পারে । পাখির মত রাজা করে ঝটপট্ বেদে কানে কানে বলে —- হিং টিং ছট্। স্বপ্ন মঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে , শুনে পুণ্যবান।। হবুপুর রাজ্যে আজ দিন ছয় –সাত চোখে কারো নিদ্রা নাই, পেটে নাই ভাত। শীর্ণ গালে হাত দিয়ে নত করি শির রাজ্যসুদ্ধ বালকবৃদ্ধ ভেবেই অস্থির । ছেলেরা ভুলেছে খেলা, পন্ডিতেরা পাঠ, মেয়েরা করেছে চুপ এতই বিভ্রাট। সারি সারি বসে গেছে, কথা নাহি মুখে, চিন্তা যত ভারী হয় মাথা পড়ে ঝুঁকে । ভুঁইফোঁড় তত্ত্ব যেন ভূমিতলে খোঁজে, সবে যেন বসে গেছে নিরাকার ভোজে। মাঝে মঝে দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া উৎকট হঠাৎ ফুকারি উঠে-হিং টিং ছট্। স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান।। চারি দিক হতে এল পন্ডিতের দল— অযোধ্যা কনোজ কাঞ্চী মগধ কোশল। উজ্জয়িনী হতে এল বুধ-অবতংস কালিদাস কবীন্দ্রের ভাগিনেয় বংশ। মোটা মোটা পুঁথি লয়ে উলটায় পাতা, ঘন ঘন নাড়ে বসি টিকিসুদ্ধ মাথা। বড়ো বড়ো মস্তকের পাকা শস্যখেত বাতাসে দুলিছে যেন শীর্ষ- সমেত। কেহ শ্রুতি, কেহ স্মৃতি, কেহ-বা পুরাণ, কেহ ব্যাকারণ দেখে, কেহ অভিধান । কোনোখানে নাহি পায় অর্থ কোনোরূপ, বেড়ে ওঠে অনুস্বর-বিসর্গের স্তূপ। চুপ করে বসে থাকে, বিষম সংকট, থেকে থেকে হেঁকে ওঠে -হিং টিং ছট্। স্বপ্ন মঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান।। কহিলেন হতাশ্বাস হবুচন্দ্ররাজ, ম্লেচ্ছদেশে আছে নাকি পন্ডিত সমাজ– তাহাদের ডেকে আন যে যেখানে আছে, অর্থ যদি ধরা পড়ে তাহাদের কাছে।‘ কটা-চুল নীলচক্ষু কপিশকপোল যবন পন্ডিত আসে , বাজে ঢাক ঢোল ॥ গায়ে কলো মোটা মোটা ছাঁটাছোঁটা কুর্তি- গ্রীষ্ম তাপে উষ্মা বাড়ে, ভারি উগ্রমূর্তি। ভূমিকা না করি কিছু ঘড়ি খুলি কয়, ‘সতেরো মিনিট মাত্র রয়েছে সময়—- কথা যদি থাকে কিছু বলো চট্পট্।‘ সভাসুদ্ধ বলি উঠে – হিং টিং ছট্। স্বপ্ন মঙ্গলের কথা অমৃতসমান ।। গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান।। স্বপ্ন শুনি ম্লেচ্ছমুখ রাঙা টকটকে, আগুন ছুটিতে চায় মুখে আর চোখে । কিন্তু তবু স্বপ্ন ওটা করি অনুমান , যদিও রাজার শিরে পেয়েছিল স্থান । অর্থ চাই? রাজ কোষে আছে ভূরি ভূরি – রাজ স্বপ্নে অর্থ নাই যত মাথা খুড়ি । নাই অর্থ, কিন্তু তবু কহি অকপট শুনিতে কী মিষ্ট আহা –হিং টিং ছট্।’ স্বপ্ন মঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুন্যবান।। শুনিয়া সভাস্থ সবে করে ধিক্-ধিক , কোথাকার গন্ডমূর্খ পাষন্ড নাস্তিক! স্বপ্ন শুধু স্বপ্ন মাত্র মস্তিষ্ক বিকার এ কথা কেমন করে করিব স্বীকার ! জগৎ বিখ্যাত মোরা ‘ধর্মপ্রাণ‘ জাতি– স্বপ্ন উড়াইয়ে দিবে! দুপুরে ডাকাতি! হবুচন্দ্র রাজা কহে পাকালিয়া চোখে, ‘গবুচন্দ্র, এদের উচিত শিক্ষা হোক । হেঁটোয় কন্টক দাও , উপরে কন্টক, ডালকুত্তাদের মাঝে করহ বন্টক‘। সতেরো মিনিট—কাল না হইতে শেষ ম্লেচ্ছ পন্ডিতের আর না মিলে উদ্দেশ। সভাস্থ সবাই ভাসে আনন্দাশ্রুনীরে, ধর্মরাজ্যে পুনর্বার শান্তি এল ফিরে। পন্ডিতেরা মুখচক্ষু করিয়া বিকট পুনর্বার উচ্চারিল —- হিং টিং ছট্ স্বপ্ন মঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান।। অতঃপর গৌড় হতে এল হেন বেলা যবন পন্ডিতদের গুরু মারা চেলা। নগ্নশির, সজ্জা নাই, লজ্জা নাই ধড়ে—- কাছা কোঁচা শতবার খ‘সে খ‘সে পড়ে। অস্তিত্ব আছে না আছে , ক্ষীণখর্ব দেহ, বাক্য যবে বহিরায় না থাকে সন্দেহ। এতটুকু যন্ত্র হতে এত শব্দ হয় দেখিয়া বিশ্বের লাগে বিষম বিস্ময়। না জানে অভিবাদন, না পুছে কুশল , পিতৃনাম শুধাইলে উদ্যতমুষল। সগর্বে জিজ্ঞাসা করে, কী লয়ে বিচার! শুনিলে বলিতে পারি কথা দুই- চার, ব্যাখ্যায় করিতে পারি উলট্পালট।‘ সমস্বরে কহে সবে –হিং টিং ছট্ স্বপ্ন মঙ্গলের কথা অমৃতসমান , গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান।। স্বপ্ন কথা শুনি মুখ গম্ভীর করিয়া কহিল গৌড়ীয় সাধু প্রহর ধরিয়া , ‘নিতান্ত সরল অর্থ, অতি পরিস্কার— বহু পুরাতন ভাব, নব আবিস্কার । ত্র্যম্বকের ত্রিয়ন ত্রিকাল ত্রিগুন শক্তিভেদে ব্যাক্তিভেদ দ্বিগুণ বিগুণ। বিবর্তন আবর্তন সম্বর্তন আদি জীবশক্তি শিবশক্তি করে বিসম্বাদী। আকর্ষন বিকর্ষন পুরুষ প্রকৃতি। আণব চৌম্বক বলে আকৃতি বিকৃতি। কুশাগ্রে প্রবহমান জীবাত্মবিদ্যুৎ ধারণা পরমা শক্তি সেথায় উদ্ভুদ। ত্রয়ী শক্তি ত্রিস্বরূপে প্রপঞ্চে প্রকট, সংক্ষেপে বলিতে গেলে—হিং টিং ছট্ স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান।। ‘ সাধু সাধু সাধু ‘ রবে কাঁপে চারি ধার– সবে বলে , ‘পরিস্কার, অতি পরিস্কার!‘ দুর্বোধ যা-কিছু ছিল হয়ে গেল জল, শন্য আকাশের মতো অত্যন্ত নির্মল। হাঁপ ছাড়ি উঠিলেন হবুচন্দ্ররাজ, আপনার মাথা হতে খুলি লয়ে তাজ পরাইয়া দিল ক্ষীণ বাঙালির শিরে— ভারে তার মাথা টুকৃ পড়ে বুঝি ছিড়ে। বহু দিন পরে আজ চিন্তা গেল ছুটে, হাবুডুবু হবুরাজ্য নড়িচড়ি ওঠে। ছেলেরা ধরিল খেলা, বৃদ্ধেরা তামুক- এক দন্ডে খুলে গেল রমণীর মুখ। দেশ-জোড়া মাথা-ধরা ছেড়ে গেল চট্, সবাই বুঝিয়া গেল-হিং টিং ছট্ স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান।। যে শুনিবে এই স্বপ্ন মঙ্গলের কথা সর্বভ্রম ঘুচে যবে, নহিবে অন্যথা। বিশ্বে কভূ বিশ্ব ভেবে হবে না ঠকিতে, সত্যেরে সে মিথ্যা বলি বুঝিবে চকিতে। যা আছে তা নাই আর নাই যাহা আছে, এ কথা জাজ্বল্যমান হবে তার কাছে । সবাই সরল ভাবে দেখিবে যা-কিছু সে আপন লেজুড় জুড়িবে তার পিছু। এসো ভাই, তোল হাই, শুয়ে পড়ো চিত, অনিশ্চিত এ সংসারে এ কথা নিশ্চিত— জগতে সকলেই মিথ্যা, সব মায়াময়, স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয়। স্বপ্ন মঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান। [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] সমালোচক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট কবিতা বাবা নাকি বই লেখে সব নিজে। কিছুই বোঝা যায় না লেখেন কী যে! সেদিন পড়ে শোনাচ্ছিলেন তোরে, বুঝেছিলি? – বল্‌ মা, সত্যি করে। এমন লেখায় তবে বল্‌ দেখি কী হবে।। তোর মুখে মা, যেমন কথা শুনি তেমন কেন লেখেন নাকো উনি। ঠাকুরমা কি বাবাকে কক্‌খনো রাজার কথা শোনায় নিকো কোনো? সে-সব কথাগুলি গেছেন বুঝি ভুলি? স্নান করতে বেলা হল দেখে তুমি কেবল যাও, মা, ডেকে ডেকে – খাবার নিয়ে তুমি বসেই থাকো, সে কথা তাঁর মনেই থাকে নাকো। করেন সারা বেলা লেখা-লেখা খেলা।। বাবার ঘরে আমি খেলতে গেলে তুমি আমায় বল ‘দুষ্টু’ ছেলে! বকো আমায় গোল করলে পরে, ‘দেখছিস নে লিখছে বাবা ঘরে!’ বল্‌ তো, সত্যি বল্‌ , লিখে কী হয় ফল।। আমি যখন বাবার খাতা টেনে লিখি বসে দোয়াত কলম এনে – ক খ গ ঘ ঙ হ য ব র, আমার বেলা কেন, মা, রাগ কর! বাবা যখন লেখে কথা কও না দেখে।। বড়ো বড়ো রুল-কাটা কাগোজ নষ্ট বাবা করেন না কি রোজ? আমি যদি নৌকো করতে চাই অম্‌নি বল ‘নষ্ট করতে নাই’। সাদা কাগজে কালো করলে বুঝি ভালো ? ( ছোটদের ছড়া-কবিতা ) পড়ুন – বিভিন্ন বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেরনাদায়ক বাণী | Quotes in Bengali [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] পূজার সাজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আশ্বিনের মাঝামাঝি উঠিল বাজনা বাজি, পূজার সময় এল কাছে । মধু বিধু দুই ভাই ছুটাছুটি করে তাই আনন্দে দু হাত তুলি নাচে । পিতা বসি ছিল দ্বারে ; দুজনে শুধালো তারে, ‘কী পোশাক আনিয়াছ কিনে ।’ পিতা কহে, ‘আছে আছে তোদের মায়ের কাছে, দেখিতে পাইবি ঠিক দিনে ।’ সবুর সহে না আর – জননীরে বার বার কহে, ‘মা গো, ধরি তোর পায়ে, বাবা আমাদের তরে কী কিনে এনেছে ঘরে একবার দে-না, মা, দেখায়ে ।’ ব্যস্ত দেখি হাসিয়া মা দুখানি ছিটের জামা দেখাইল করিয়া আদর । মধু কহে, ‘আর নেই ?’ মা কহিল, ‘আছে এই একজোড়া ধুতি ও চাদর ।’ রাগিয়া আগুন ছেলে – কাপড় ধুলায় ফেলে কাঁদিয়া কহিল, ‘চাহি না মা ! রায়বাবুদের গুপি পেয়েছে জরির টুপি ফুলকাটা সাটিনের জামা ।’ মা কহিল, ‘মধু, ছি ছি, কেন কাঁদ মিছামিছি ! গরিব যে তোমাদের বাপ । এবার হয় নি ধান, কত গেছে লোকসান, পেয়েছেন কত দুঃখ তাপ । তবু দেখো বহু ক্লেশে তোমাদের ভালোবেসে সাধ্যমত এনেছেন কিনে – সে জিনিস অনাদরে ফেলিলি ধূলির ‘পরে, এই শিক্ষা হল এত দিনে !’ বিধু বলে, ‘এ কাপড় পছন্দ হয়েছে মোর, এই জামা পরাস আমারে !’ মধু শুনে আরো রেগে ঘর ছেড়ে দ্রুত বেগে গেল রায়-বাবুদের দ্বারে । সেথা মেলা লোক জড়ো ; রায়বাবু ব্যস্ত বড়ো, দালান সাজাতে গেছে রাত । মধু যবে এক কোণে দাঁড়াইল ম্লানমনে চোখে তাঁর পড়িল হঠাৎ । কাছে ডাকি স্নেহভরে কহেন করুণ স্বরে তারে দুই বাহুতে বাঁধিয়া, ‘কী রে মধু, হয়েছে কী, তোরে যে শুকনো দেখি !’ শুনি মধু উঠিল কাঁদিয়া- কহিল, ‘আমার তরে বাবা আনিয়াছে ঘরে শুধু এক ছিটের কাপড় !’ শুনি রায়-মহাশয় হাসিয়া মধুরে কয়, ‘সেজন্য ভাবনা কিবা তোর !’ ছেলেরে ডাকিয়া চুপি কহিলেন, ‘ওরে গুপি, তোর জামা দে তুই মধুকে ।’ গুপির সে জামা পেয়ে মধু ঘরে যায় ধেয়ে, হাসি আর নাহি ধরে মুখে । বুক ফুলাইয়া চলে, সবারে ডাকিয়া বলে, ‘দেখো কাকা, দেখো চেয়ে মামা- ওই আমাদের বিধু ছিট পরিয়াছে শুধু, মোর গায়ে সাটিনের জামা ।’ মা শুনি কহেন আসি লাজে অশ্রুজলে ভাসি কপালে করিয়া করাঘাত- ‘হই দুঃখী হই দীন কাহারো রাখি না ঋণ, কারো কাছে পাতি নাই হাত । তুমি আমাদেরি ছেলে ভিক্ষা লয়ে অবহেলে অহংকার কর ধেয়ে ধেয়ে ! ছেঁড়া ধুতি আপনার ঢের বেশি দাম তার ভিক্ষা-করা সাটিনের চেয়ে । আয় বিধু, আয় বুকে, চুমো খাই চাঁদমুখে- তোর সাজ সব চেয়ে ভালো । দরিদ্র ছেলের দেহে দরিদ্র বাপের স্নেহে ছিটের জামাটি করে আলো ।’ (ছোটদের ছড়া-কবিতা,) [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] কাগজের নৌকা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছুটি হলে রোজ ভাসাই জলে কাগজ-নৌকাখানি। লিখে রাখি তাতে আপনার নাম, লিখি আমাদের বাড়ি কোন গ্রাম বড়ো বড়ো ক’রে মোটা অক্ষরে যতনে লাইন টানি। যদি সে নৌকা আর-কোনো দেশে আর-কারো হাতে পড়ে গিয়ে শেষে আমার লিখন পড়িয়া তখন বুঝিবে সে অনুমানি কার কাছ হতে ভেসে এল স্রোতে কাগজ-নৌকাখানি ।। আমার নৌকা সাজাই যতনে শিউলি বকুলে ভরি। বাড়ির বাগানে গাছের তলায় ছেয়ে থাকে ফুল সকাল বেলায়, শিশিরের জল করে ঝলমল্‌ প্রভাতের আলো পড়ি। সেই কুসুমের অতি ছোটো বোঝা কোন্‌ দিক-পানে চলে যায় সোজা, বেলাশেষে যদি পার হয়ে নদী ঠেকে কোনোখানে যেয়ে – প্রভাতের ফুল সাঁঝে পাবে কূল কাগজের তরী বেয়ে ।। আমার নৌকা ভাসাইয়া জলে চেয়ে থাকি বসি তীরে। ছোটো ছোটো ঢেউ উঠে আর পড়ে, রবির কিরণে ঝিকিমিকি করে, আকাশেতে পাখি চলে যায় ডাকি, বায়ু বহে ধীরে ধীরে । গগনের তলে মেঘ ভাসে কত আমারি সে ছোটো নৌকার মতো – কে ভাসালে তায়, কোথা ভেসে যায়, কোন দেশে গিয়ে লাগে। ঐ মেঘ আর তরণী আমার কে যাবে কাহার আগে ।। বেলা হলে শেষে বাড়ি থেকে এসে নিয়ে যায় মোরে টানি আমি ঘরে ফিরি, থাকি কোনে মিশি, যেথা কাটে দিন সেথা কাটে নিশি, কোথা কোন্‌ গাঁয় ভেসে চলে যায় আমার নৌকাখানি । কোন্‌ পথে যাবে কিছু নাই জানা, কেহ তারে কভু নাহি করে মানা, ধ’রে নাহি রাখে, ফিরে নাহি ডাকে – ধায় নব নব দেশে। কাগজের তরী, তারি ‘পরে চড়ি মন যায় ভেসে ভেসে ।। রাত হয়ে আসে, শুই বিছানায়, মুখ ঢাকি দুই হাতে – চোখ বুঁজে ভাবি এমন আঁধার, কালী দিয়ে ঢালা নদীর দুধার – তারি মাঝখানে কোথায় কে জানে নৌকা চলেছে রাতে। আকাশের তারা মিটি মিটি করে, শিয়াল ডাকিছে প্রহরে প্রহরে, তরীখানি বুঝি ঘর খুঁজি খুঁজি তীরে তীরে ফিরে ভাসি। ঘুম লয়ে সাথে চড়েছে তাহাতে ঘুম-পাড়ানিয়া মাসি ।। ( ছোটদের ছড়া-কবিতা) [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] বীরপুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর rabindranath tagore bengali rhymes মনে করো যেন বিদেশ ঘুরে মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে । তুমি যাচ্ছ পালকিতে মা চড়ে দরজা দুটো একটুকু ফাঁক করে, আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার ’পরে টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে । রাস্তা থেকে ঘোড়ার খুরে খুরে রাঙা ধুলোয় মেঘ উড়িয়ে আসে । সন্ধে হল,সূর্য নামে পাটে এলেম যেন জোড়াদিঘির মাঠে । ধূ ধূ করে যে দিক পানে চাই কোনোখানে জনমানব নাই, তুমি যেন আপনমনে তাই ভয় পেয়েছ; ভাবছ, এলেম কোথা? আমি বলছি, ‘ভয় পেয়ো না মা গো, ঐ দেখা যায় মরা নদীর সোঁতা ।’ চোরকাঁটাতে মাঠ রয়েছে ঢেকে, মাঝখানেতে পথ গিয়েছে বেঁকে । গোরু বাছুর নেইকো কোনোখানে, সন্ধে হতেই গেছে গাঁয়ের পানে, আমরা কোথায় যাচ্ছি কে তা জানে, অন্ধকারে দেখা যায় না ভালো । তুমি যেন বললে আমায় ডেকে, ‘দিঘির ধারে ঐ যে কিসের আলো!’ এমন সময় ‘হারে রে রে রে রে’ ঐ যে কারা আসতেছে ডাক ছেড়ে । তুমি ভয়ে পালকিতে এক কোণে ঠাকুর দেবতা স্মরণ করছ মনে, বেয়ারাগুলো পাশের কাঁটাবনে পালকি ছেড়ে কাঁপছে থরোথরো। আমি যেন তোমায় বলছি ডেকে, ‘আমি আছি, ভয় কেন মা কর।’ হাতে লাঠি, মাথায় ঝাঁকড়া চুল কানে তাদের গোঁজা জবার ফুল । আমি বলি, ‘দাঁড়া, খবরদার! এক পা আগে আসিস যদি আর – এই চেয়ে দেখ আমার তলোয়ার, টুকরো করে দেব তোদের সেরে ।’ শুনে তারা লম্ফ দিয়ে উঠে চেঁচিয়ে উঠল, ‘হারে রে রে রে রে।’ তুমি বললে, ‘যাস না খোকা ওরে’ আমি বলি, ‘দেখো না চুপ করে।’ ছুটিয়ে ঘোড়া গেলেম তাদের মাঝে, ঢাল তলোয়ার ঝন্‌ঝনিয়ে বাজে কী ভয়ানক লড়াই হল মা যে, শুনে তোমার গায়ে দেবে কাঁটা। কত লোক যে পালিয়ে গেল ভয়ে, কত লোকের মাথা পড়ল কাটা। এত লোকের সঙ্গে লড়াই করে ভাবছ খোকা গেলই বুঝি মরে। আমি তখন রক্ত মেখে ঘেমে বলছি এসে, ‘লড়াই গেছে থেমে’, তুমি শুনে পালকি থেকে নেমে চুমো খেয়ে নিচ্ছ আমায় কোলে – বলছ, ‘ভাগ্যে খোকা সঙ্গে ছিল! কী দুর্দশাই হত তা না হলে।’ রোজ কত কী ঘটে যাহা তাহা – এমন কেন সত্যি হয় না আহা। ঠিক যেন এক গল্প হত তবে, শুনত যারা অবাক হত সবে, দাদা বলত, ‘কেমন করে হবে, খোকার গায়ে এত কি জোর আছে।’ পাড়ার লোকে বলত সবাই শুনে, ‘ভাগ্যে খোকা ছিল মায়ের কাছে।’ ( ছোটদের ছড়া-কবিতা ) [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর rabindranath tagore rhymes in Bengali ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা, ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ, আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা। রক্ত আলোর মদে মাতাল ভোরে আজকে যে যা বলে বলুক তোরে, সকল তর্ক হেলায় তুচ্ছ ক’রে পুচ্ছটি তোর উচ্চে তুলে নাচা। আয় দুরন্ত, আয় রে আমার কাঁচা। খাঁচাখানা দুলছে মৃদু হাওয়ায়; আর তো কিছুই নড়ে না রে ওদের ঘরে, ওদের ঘরের দাওয়ায়। ওই যে প্রবীণ, ওই যে পরম পাকা, চক্ষুকর্ণ দুইটি ডানায় ঢাকা, ঝিমায় যেন চিত্রপটে আঁকা অন্ধকারে বন্ধ করা খাঁচায়। আয় জীবন্ত, আয় রে আমার কাঁচা। বাহিরপানে তাকায় না যে কেউ, দেখে না যে বাণ ডেকেছে জোয়ার-জলে উঠছে প্রবল ঢেউ। চলতে ওরা চায় না মাটির ছেলে মাটির ‘পরে চরণ ফেলে ফেলে, আছে অচল আসনখানা মেলে যে যার আপন উচ্চ বাঁশের মাচায়, আয় অশান্ত, আয় রে আমার কাঁচা। তোরে হেথায় করবে সবাই মানা। হঠাৎ আলো দেখবে যখন ভাববে এ কী বিষম কাণ্ডখানা। সংঘাতে তোর উঠবে ওরা রেগে, শয়ন ছেড়ে আসবে ছুটে বেগে, সেই সুযোগে ঘুমের থেকে জেগে লাগবে লড়াই মিথ্যা এবং সাঁচায়। আয় প্রচণ্ড, আয় রে আমার কাঁচা। শিকল-দেবীর ওই যে পূজাবেদী চিরকাল কি রইবে খাড়া। পাগলামি তুই আয় রে দুয়ার ভেদি। ঝড়ের মাতন, বিজয়-কেতন নেড়ে অট্টহাস্যে আকাশখানা ফেড়ে, ভোলানাথের ঝোলাঝুলি ঝেড়ে ভুলগুলো সব আন্‌ রে বাছা-বাছা। আয় প্রমত্ত, আয় রে আমার কাঁচা। আন্‌ রে টেনে বাঁধা-পথের শেষে। বিবাগী কর্‌ অবাধপানে, পথ কেটে যাই অজানাদের দেশে। আপদ আছে, জানি অঘাত আছে, তাই জেনে তো বক্ষে পরান নাচে, ঘুচিয়ে দে ভাই পুঁথি-পোড়োর কাছে পথে চলার বিধিবিধান যাচা। আয় প্রমুক্ত, আয় রে আমার কাঁচা। চিরযুবা তুই যে চিরজীবী, জীর্ণ জরা ঝরিয়ে দিয়ে প্রাণ অফুরান ছড়িয়ে দেদার দিবি। সবুজ নেশায় ভোর করেছি ধরা, ঝড়ের মেঘে তোরি তড়িৎ ভরা, বসন্তেরে পরাস আকুল-করা আপন গলার বকুল-মাল্যগাছা, আয় রে অমর, আয় রে আমার কাঁচা। [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] আমাদের ছোট নদী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর small poem of rabindranath tagore in bengali আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে। পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি, দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি। চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা, একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা। কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক, রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক। আর-পারে আমবন তালবন চলে, গাঁয়ের বামুন পাড়া তারি ছায়াতলে। তীরে তীরে ছেলে মেয়ে নাইবার কালে গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে। সকালে বিকালে কভু নাওয়া হলে পরে আঁচল ছাঁকিয়া তারা ছোটো মাছ ধরে। বালি দিয়ে মাজে থালা, ঘটিগুলি মাজে, বধূরা কাপড় কেচে যায় গৃহকাজে। আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভর ভর মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর। মহাবেগে কলকল কোলাহল ওঠে, ঘোলা জলে পাকগুলি ঘুরে ঘুরে ছোটে। দুই কূলে বনে বনে পড়ে যায় সাড়া, বরষার উৎসবে জেগে ওঠে পাড়া।। [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] সোনার তরী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা। কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা। রাশি রাশি ভারা ভারা ধান কাটা হল সারা, ভরা নদী ক্ষুরধারা খরপরশা। কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা। একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা, চারি দিকে বাঁকা জল করিছে খেলা। পরপারে দেখি আঁকা তরুছায়ামসীমাখা গ্রামখানি মেঘে ঢাকা প্রভাতবেলা– এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা। গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে, দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে। ভরা-পালে চলে যায়, কোনো দিকে নাহি চায়, ঢেউগুলি নিরুপায় ভাঙে দু-ধারে– দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে। ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্‌ বিদেশে, বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে। যেয়ো যেথা যেতে চাও, যারে খুশি তারে দাও, শুধু তুমি নিয়ে যাও ক্ষণিক হেসে আমার সোনার ধান কূলেতে এসে। যত চাও তত লও তরণী-‘পরে। আর আছে?– আর নাই, দিয়েছি ভরে। এতকাল নদীকূলে যাহা লয়ে ছিনু ভুলে সকলি দিলাম তুলে থরে বিথরে– এখন আমারে লহ করুণা করে। ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই– ছোটো সে তরী আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি। শ্রাবণগগন ঘিরে ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে, শূন্য নদীর তীরে রহিনু পড়ি– যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী। [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] তালগাছ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে। মনে সাধ, কালো মেঘ ফুঁড়ে যায়, একেবারে উড়ে যায়; কোথা পাবে পাখা সে? তাই তো সে ঠিক তার মাথাতে গোল গোল পাতাতে ইচ্ছাটি মেলে তার,– মনে মনে ভাবে, বুঝি ডানা এই, উড়ে যেতে মানা নেই বাসাখানি ফেলে তার। সারাদিন ঝরঝর থত্থর কাঁপে পাতা-পত্তর, ওড়ে যেন ভাবে ও, মনে মনে আকাশেতে বেড়িয়ে তারাদের এড়িয়ে যেন কোথা যাবে ও। তার পরে হাওয়া যেই নেমে যায়, পাতা কাঁপা থেমে যায়, ফেরে তার মনটি যেই ভাবে, মা যে হয় মাটি তার ভালো লাগে আরবার পৃথিবীর কোণটি। [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] অকর্মার বিভ্রাট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর small poem of rabindranath tagore in bengali লাঙল কাঁদিয়া বলে ছাড়ি দিয়ে গলা, তুই কোথা হতে এলি ওরে ভাই ফলা? যেদিন আমার সাথে তোরে দিল জুড়ি সেই দিন হতে মোর মাথা-খোঁড়াখুঁড়ি। ফলা কহে, ভালো ভাই, আমি যাই খসে, দেখি তুমি কী আরামে থাক ঘরে ব’সে। ফলাখানা টুটে গেল, হল্‌খানা তাই খুশি হয়ে পড়ে থাকে, কোনো কর্ম নাই। চাষা বলে, এ আপদ আর কেন রাখা, এরে আজ চালা করে ধরাইব আখা। হল্‌ বলে, ওরে ফলা, আয় ভাই ধেয়ে— খাটুনি যে ভালো ছিল জ্বলুনির চেয়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি কর্ম সম্পর্কে পড়ুন – উইকিপিডিয়া [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] মাঝি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Small poem of rabindranath tagore in bengali আমার যেতে ইচ্ছে করে নদীটির ওই পারে যেথায় ধারে ধারে বাঁশের খোঁটায় ডিঙি নৌকো বাঁধা সারে সারে। কৃষণেরা পার হয়ে যায় লাঙল কাঁধে ফেলে, জাল টেনে নেয় জেলে, গরু মহিষ সাঁতরে নিয়ে যায় রাখালের ছেলে। সন্ধ্যে হলে যেখান থেকে সবাই ফেরে ঘরে, শুধু রাত দুপুরে শেয়ালগুলো ডেকে ওঠে ঝাউ ডাঙাটার পরে। মা, যদি হও রাজি, বড় হলে আমি হব খেয়াঘাটের মাঝি। [siteorigin_widget class=”WP_Widget_Media_Video”][/siteorigin_widget] [siteorigin_widget class=”Adsforwp_Ads_Widget”][/siteorigin_widget] প্রিয় পাঠক আমি এখানে যথা সম্ভব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাছাই করা ছোট কবিতা মানে ছোটদের মজার ছড়া আবৃত্তি তুলে ধরেছি। আশাকরি আপনার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট কবিতা সংগ্রহটি ভালো লাগবে। অবশ্যই নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন আপনার মতামত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটদের কবিতা ছড়া চড়িভাতি হিং টিং ছট্ সমালোচক বিভিন্ন বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেরনাদায়ক বাণী | Quotes in Bengali পূজার সাজ কাগজের নৌকা বীরপুরুষ ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা আমাদের ছোট নদী সোনার তরী তালগাছ অকর্মার বিভ্রাট মাঝি Categories: Bangla Poem, Rabindranath Thakur Tags: rabindranath tagore rhymes in Bengali, small poem of rabindranath tagore in Bengali, ছোটদের কবিতা আবৃত্তি, ছোটদের ছড়া, ছোটদের ছড়া আবৃত্তি, ছোটদের ছড়া ও কবিতা, ছোটদের বাংলা কবিতা, ছোটদের বাংলা ছড়া, ছোটদের মজার কবিতা, ছো

Comments

Post a Comment